• Recently Post

    গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম । সম্পূর্ন ভ্রমণ গাইডলাইন


    Guliakhali Sea Beach
    গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

    গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত 

    গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ( Guliakhali Sea Beach ) চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত।  স্থানীয়দের কাছে এই
    সৈকতটি মুরাদপুর সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালীর দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।

     গুলিয়াখালীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এটিকে করেছে মনোরম। একদিকে সমুদ্রের জল আর অন্যদিকে কেওড়া বন এই সৈকতকে করেছে অনন্য। কেওড়া বনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারপাশে কেওড়া গাছের শিকড় দেখা যায়। সোয়াম্প ফরেস্ট এবং ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের মতো পরিবেশ এখানে পাওয়া যাবে। সবুজ পরিবেশের বিস্তৃত গালিচা গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতকে করেছে অন্যরকম।


    সমুদ্রের ধারে সবুজ ঘাসের উন্মুক্ত বিস্তৃতি অবশ্যই আপনার নজর কাড়বে। সৈকতের পাশে সবুজ ঘাসের এই মাঠে স্বাভাবিকভাবেই ড্রেন তৈরি হয়েছে। জোয়ার-ভাটার সময় এসব ড্রেন পানিতে ভরে যায়। 

    চারিদিকে সবুজ ঘাস আর তার মধ্যে ছোট ছোট ড্রেনের পানি যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। সমুদ্রের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নির্জন পরিবেশের নির্জন সমুদ্র সৈকত আপনাকে অন্যভাবে ধরবে। আপনি চাইলে জেলেদের নৌকায় করে সাগরে ঘুরে আসতে পারেন। এই ক্ষেত্রে, আপনাকে নৌকা ঠিক করতে দর কষাকষি করতে হবে।

    Guliakhali Sea Beach
    জোয়ার সময় যখন গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে পানি উঠে



    গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে কীভাবে যাবেন:

    এই সমুদ্র সৈকত সীতাকুণ্ডে হওয়ায় দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে প্রথমে সীতাকুণ্ডে আসতে হবে। ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন উপায়ে সীতাকুণ্ড আসতে পারেন।


    ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড

    ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেকোন বাসে সীতাকুন্ড যাওয়া যায়। এসি এবং নন-এসি বাসের ভাড়া ৪৫০-১২০০ টাকা। প্রয়োজনে বাস সুপারভাইজারকে আগে থেকে সীতাকুণ্ড নামাতে বলুন। 

    ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড মেইল ​​ট্রেনে জনপ্রতি ভাড়া ১২০ টাকা দিয়ে সীতাকুণ্ড আসতে পারেন। আপনি ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে ফেনী যেতে পারেন, ভাড়া ক্লাস ভেদে ২৮৫-৬০০ টাকা। 

    ফেনী থেকে লোকাল বাসে করে সীতাকুন্ড যেতে পারেন। ফেনী থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত লোকাল বাসের ভাড়া পড়বে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।


    চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ড

    চট্টগ্রাম থেকে আলংকার মোড়, এ কে খান মোড় থেকে সীতাকুণ্ড যাওয়ার বাস ও মেক্সি পাওয়া যায়। আপনি আপনার পছন্দের জায়গা থেকে সীতাকুণ্ড বাজারে আসতে পারেন।


    সীতাকুণ্ড থেকে গুলিয়াখালী

    সীতাকুণ্ড বাসস্ট্যান্ড ব্রিজ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত বাঁধে যেতে পারেন।

     গুলিয়াখালী বিচ ড্যাম পর্যন্ত অটো ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা, আর অটো রিজার্ভ নিতে চাইলে ভাড়া ১৫০-২০০ টাকা। দর কষাকষির মাধ্যমে ভাড়ার পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। 

    সীতাকুণ্ডে ফেরার জন্য সিএনজি চালকের নম্বর আগে থেকেই নিতে পারেন। অথবা আসা-যাওয়ার সময় রিজার্ভ করে রাখতে পারেন। সন্ধ্যায় ফেরার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।

    Guliakhali Sea Beach
    গোধূলির লালচে আবায় গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত


    গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে কোথায় থাকবেন:

    গুলিয়াখালীতে থাকার ব্যবস্থা নেই, সী-বিচে শুধু কয়েকটি ছোট দোকান আছে।

    থাকতে চাইলে সীতাকুণ্ড বাজারে সাইমন ও সৌদিয়া হোটেলে থাকতে পারেন। সাইমনে একটি রুম ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং সৌদিয়া একটি রুম পেতে আপনাকে ৬০০থেকে ১৮০০ টাকা দিতে হবে।


    গুলিয়াখালী ভ্রমণের টিপস:

    সীতাকুণ্ডের খুব কাছে হওয়ায় গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে পার করার পর্যাপ্ত সময় পাবেন। এই সময়ে আপনি সীতাকুণ্ডের আশেপাশে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারেন।

     গুলিয়াখালীর আশেপাশের পর্যটন স্থানের মধ্যে রয়েছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, ঝরঝরি ঝর্ণা, কমলদহ ঝর্ণা, কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট, মহামায়া লেক, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা। 

    Guliakhali Sea Beach
    গোধূলির আলোয় গুলিয়াখালী


    দ্রষ্টব্য:   

    ভ্রমণ নিরাপদ করতে প্রয়োজনে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা নিন। ভ্রমণ এলাকায় ময়লা বা বর্জ্য ফেলবেন না। নিজের পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন হোন এবং অন্যকে সচেতন করার চেষ্টা করুন।

    জোয়ারের সময় সমুদ্র সৈকতের কাছাকাছি না থাকাই ভালো। জোয়ার-ভাটার সময় পানি বেড়ে নালাগুলো ভরাট হয়ে যায়। এতে পারাপারে সমস্যা হতে পারে। এবং যেহেতু এটি একটি পর্যটক-বান্ধব সমুদ্র সৈকত নয়, সমুদ্রে যাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। আপনি যদি সাঁতার না জানেন তবে কখনও দূরে যাবেন না।